ধান চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশের জলবায়ু ধান চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগী হওয়ায় এটি এদেশের একটি প্রাচীনতম ফসল হিসেবে পরিচিত বর্তমানে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে চতুর্থ বৃহত্তম ধানই এদেশের প্রধান খাদ্য শস্য দেশের অর্থনীতি মূলত: ধান উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে কমছে আবাদি জমির পরিমাণ নতুন নতুন বাড়ী-ঘর, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ এর মূল কারণ এর উপর রয়েছে খরা, বন্যা, লবণাক্ততাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপর দিকে বাড়তি জনসংখ্যার জন্য খাদ্য চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে চাষাবাদযোগ্য ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধির সুযোগ না থাকায় আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের মাধ্যমে অতিরিক্ত খাদ্য চাহিদার যোগান দেওয়া হচ্ছে ধানের ইংরেজি নাম Rice .

ধান পরিচিতি

বৈজ্ঞানিক নাম Oryza sativa

দেশী জাতঃ হাসিকলমী, কালিজিরা, চিনিসাগর

উচ্চ ফলনশীল জাতঃ অধিক ফলন লাভের জন্য চাষ উপযোগী সঠিক জাত নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাংলাদেশে প্রচলিত উচ্চ ফলনশীল জাতের নাম তার উৎপাদনকারী কোম্পানীর নাম নিম্নরুপ-

জাত

কোম্পানী / গবেষণা পতিষ্ঠান

বীজ বপনের সময়/মৌসুম

ব্রি ধান ৫০ (বাংলামতি)

BRRI

বোরো

বিআর (চান্দিনা)

BRRI

বোরো, আউশ

বিআর (মালা)

BRRI

বোরো, আউশ

বিআর (বিপ্লব)

BRRI

বোরো, আউশ, আমন

ব্রি ধান ২৮

BRRI

বোরো

ব্রি ধান ২৯

BRRI

বোরো

হাইব্রিড সোনার বাংলা -

মল্লিকা সীড কো.

হাইব্রিড রূপসী বাংলা-, রূপালী, সচ্ছল (চিকন)

গেটকো এগ্রো সীড

হাইব্রিড চমক

আলমগীর সীড কোম্পানী

ব্রিধান- ২৮,২৯, ৪৫, ৪৭, বি. আর ১৪ (গাজী), বি. আর ১৬ (শাহী আলম) বি. আর ২৬ (শ্রাবনী)

পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র (পদক্ষেপ বীজ ধান)

ব্রি-ধান-২৮, ২৯

Rangs Agro Biotech Ltd.

আফতাব এলপি ৫০, ৭০, ১০৮, ১০৬, ০৫ (হাইব্রিড)

আফতাব সীড

রবি (অক্টোবর-ডিসেম্বর), খরিপ- (ফেব্রুয়ারী-এপ্রিল) এবং খরিপ- (জুলাই-আগষ্ট)

ব্রিধান৩২,৪১, ৪৯, ২৮, ২৯হাইব্রিডযমুনা (QDR-3)

কৃষি বানিজ্য প্রতিষ্ঠান

হাইব্রিড হীরা-৯৯-, (HS-273), হীরা -,,,১০, মিতালী- ১২

সুপ্রীম সীড কো.

সাথী (HB09), আলোড়ন (HB8), জাগরন (GB4), শক্তি- (ব্র্যাক-), শক্তি- (ব্র্যাক-)

ব্র্যাক সীড

বিনাধান- (মংগা এলাকার জন্য)

BINA

BRRI ধান -৪৭ (লবণাক্ত সহনীয় জাত)

BRRI

 

 জাতের বৈশি[i]ষ্ঠ্য

অধিক ফলন লাভের জন্য এলাকা ভিত্তিক চাষ উপযোগী সঠিক জাত নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভাল বংশ মা ছাড়া যেমন ভাল সমন্বিত আশা করা যায় না তেমনি ভাল জাতের ভাল বীজ ছাড়া উত্তম ফসল পাওয়া যায় না নানা জাতের বীজের মধ্যে তাই সঠিক জাতটি নির্বাচন করে চাষ করা একজন কৃষকের প্রাথমিক দায়িত্ব বর্তমানে বাংলাদেশে হাইব্রিড, উফশী নানা ধরনের আধুনিক জাতের ধান চাষ করা হচ্ছে দেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লক্ষ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধানের আবাদ হচ্ছে তবে কৃষকদের কাছে সব জাতের গ্রহণযোগ্যতা সমান নয় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) থেকে উদ্ভাবিত পর্যন্ত ৪৬টি উফশী ওএকটি হাইব্রিড জাতকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে বিনা থেকে উদ্ভাবিত জাতসমূহ যেমন বিনাশাইল, বিনাধান , বিনাধান বিনাধান অনুমোদন দেয়া হয়েছে ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভাবিত দুটি জাত বিএইউ ৬৩ (ভরসা) এবং বিএ ইউ অনুমোদন দেয়া হয়েছে নীচে দেশে ব্রি উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে তুলে ধরা হল (তালিকা )
বিআর :  বোরো আউশ মৌসুমে  আবাদযোগ্য ধানের জনপ্রিয় নাম চান্দিনা কোন কোন অঞ্চলে ধান ৫৩২ আবার কোথাও কেবল  ৭৬ নামে পরিচিত চান্দিনা একটি আগাম জাত  

 বিআর :  ধানের জনপ্রিয় নাম মালা ধানের মুড়ি  খুব ভাল হয়। মালা বোরো এবং রোপা আউশের একটি জাত

 বিআর :   ধানের জনপ্রিয় নাম বিপ্লব। এটি নাবী জাত হলেও বোরো মৌসুমে ফলনের জন্য সুখ্যাত। জাত রোপা আউস এবং রোপা আমন মৌসুমেও ভাল ফলন দেয়। 

বিআর :  ধানের জনপ্রিয় নাম ব্রিশাইল। এটি একটি আলোক-সংবেদনশীল জাত। তাই কেবল রোপা আমন মৌসুমে চাষাবাদ  করার জন্য উপযোগী। ধানের বীজ বপনের সবচেয়ে ভাল সময় হলো আষাঢ় মাস। সময় বীজ বপন করলে শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত সময়ে চারা রোপণ করা যায়। কার্তিকের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহে ফুল ফোটে। অগ্রহায়ণের দ্বিতীয় তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে ধান পাকে। 

 

বিআর : আমন মৌসুমের ধানের জনপ্রিয়তা নাম দুলাভোগ। এর  চালের কালিজিরা চালের মতো সুগন্ধ আছে বলে পোলাও এবং পায়েশ তৈরির জন্য খুবই উপোযোগী। এটি আলোক- সংবেদনশীল, তাই এর চাষাবাদ রোপা আমন মৌসুমের জন্য নির্ধারিত। 

 বিআর : বোরো আউশ  মৌসুমের জাত। ব্রি ধানটি ইরি থেকে সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আশানুরুপ ফলন পাওয়ায় বিআর নামে অনুমোদন পায়। এটি একটি আগাম জাত। 

 বিআর : ঝড়-ঝঞ্ঝা কম হয় এমন অঞ্চলে ধান রোপা আউশ বোরো মৌসুমের জন্য উপযোগী। কারণ ধান বেশি পেকে গেলে ঝড়ে পড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই ধান  পাকার সাথে সাথে কর্তন করতে হবে। এর চালের আকার প্রায় বাসমতির মতো, তবে এতে সুগন্ধি নেই

 বিআর :  জাতের জনপ্রিয় নাম আশা। বোরো এবং আউশ মৌসুমের জাত ধান শীষের সাথে শক্তভাব লেগে থাকে তাই ঝড়-ঝঞ্ঝা এবং শিলা বৃষ্টি-প্রবণ এলাকার জন্য ধান বিশেষ উপযোগী

 বিআর : বোরো আউশ  মৌসুমে চাষের উপযোগী। বিআর এর জনপ্রিয় নাম সুফলা। জাতে ধান শীষের সাথে শক্তভাবে লেগে থাকে তবে আশা ধানের চেয়ে মজবুতি কিছু কম। জাত শিলাবৃষ্টি-প্রবণ এলাকার জন্য খুবই উপযোগী। 

 বিআর ১০:  ধানের জনপ্রিয় নাম প্রগতি। এজাতটি সহজে চেনা যায। কারণ ফুল ফোটার সময় শীষগুলো ডিগপাতার নিচে থাকে এবং ডিগপাতার শেষ প্রান- হঠাৎ করেই সুচালো। প্রগতিকে রোপা আমনের নাবী জাতের তালিকায় ফেলা যায়। জাতটিতে আলোক-সংবেদনশীলতা আছে। কারণে রোপণের জন্য ৪০-৫০ দিনের চারা ব্যবহার করা যায় তখন চারা বেশ লম্বা হয় এবং হাঁটু পানিতে সহজেই রোপণ করা যায়। সব সুবিধার জন্য  খুলনার লবণাক্ত এলাকায় রোপা আমন মৌসুমে জাতটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জাতের লবণাক্ত সহনশীলতা  নেই, কিন' রোপা আমনে লবণাক্ত অঞ্চলে ক্ষেতে ২০-৩০ সেমি: গভীর পানি থাকায় লবণাক্ত মাত্রা ধানের ক্ষতিকারক পর্যায় (৪ডিএস/মিটার) এর নিচে থাকে। স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতার জন্য জাত জ্যৈষ্ঠের ২০-২৫ তারিখে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কর্তন করা যায়। ফলে জমিতে সময় মতো গম, ডাল তেল ফসল আবাদ করা যায়

 বিআর ১১ : এধানের জনপ্রিয় নাম মুক্তা। ধানের ফুল ফোটার সময় শীষ ডিগপাতার উপরে থাকে এবং সহজেই দৃষ্টি কাড়ে। আমন মৌসুমের জাতটি সারা দেশে জনপ্রিয়। মুক্তা ধান স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতাবিশিষ্ট। স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতার জন্য জাত জ্যৈষ্ঠের ২০-২৫ তারিখে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কাটা যায়; ফলে জমিতে সময়মতো গম, ডাল তেল ফসল আবাদ করা যায়

 বিআর ১২ : বোরো আউশ মৌসুমের ধানের জনপ্রিয় নাম ময়না। ধানের গাছের নিচের অংশে বেগুনী রঙ দেখে জাতটি সহজে চেনা যায়। জাতটি দেশের যে সকল অঞ্চলে আগাম রোপা আউশ হয় সব এলাকার জন্য খুবই ভাল জাত

 

বিআর ১৪ : এর জনপ্রিয় নাম গাজী। বোরো আউশ মৌসুমের জাত ছড়া বের হবার পর ডিগপাতা কিছুটা হেলে যায়; ফলে শীষ উপরে দেখা যায় এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করে।  ছড়ার উপরি ভাগের ধানে হেলে শুঙ আছে। ধানের গাছ বেশ উঁচু এবং খুব মজবুত, তাই ধান পাকার সময় মাঠ কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায় না। জন্যে দেশের বিল অঞ্চলে বোরো মৌসুমে এটি খুবই জনপ্রিয়।
বিআর ১৫বোরো আউশ মৌসুমে চাষাবাদের জন্য বিআর ১৫ নামে অনুমোদন লাভ করে। এর জনপ্রিয় নাম মোহিনী জাতের চাল প্রায় স্থানীয় শানীয় ধানের মতো, কিন' এটি নাবী জাত

 বিআর ১৬ : বোরো আউশ মৌসুমের ধানের জনপ্রিয় নাম শাহীবালাম। ধানের চাল পুরানো আমলের বালাম সমমানের এবং বর্তমানে মুড়ি তৈরি জন্য খ্যাতি লাভ করেছে। 
বিআর ১৭ : ব্রি জাতটিকে হবিগঞ্জ সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করে বোরো মৌসুমে চাষের জন্য জাতটি অনুমোদন লাভ করে। ধানের জনপ্রিয় নাম হাসি জাতের গাছ বেশ  উঁচু কান্ড শক্ত। ফুল ফোটার সময় ধানের শীষগুলো ডিগপাতার উপরে  থাকে বলে সহজেই দৃষ্টি অকর্ষণ করে  এবং  জাতটির জীবনকাল মাধ্যম মেয়াদী

  বিআর ১৮ : ব্রি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করে হবিগঞ্জ সুনামগঞ্জ  হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করে। বোরো মৌসুমে জাতটি বিআর ১৮ নামে অনুমোদন লাভ করে। ধানের জনপ্রিয় নাম শাহজালাল। জাতের গাছ বেশ  উঁচু  কান্ড মজবুত এবং নাবী। 

  বিআর ১৯ : জাতটি ধান পরীক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্রি-তে আসে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এটি হবিগঞ্জ সুনামগঞ্জ  হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করা হয। বোরো মৌসুমের জাতটি বিআর ১৯ নামে অনুমোদন লাভ করে। ধানের জনপ্রিয় নাম মঙ্গল। এর ডিগপাতা ছোট এবং কান্ডের সাথে আড়াআড়িভাবে অবস্থান করে। ফুল ফোটার সময় শীষ উপরে থাকে এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করে। জাতের গাছ বেশ উঁচু এবং ধান পাকা পর্যন- খাড়া থাকে এবং নাবী

 

বিআর ২০ :  ধানের জনপ্রিয় নাম নিজামী। জাতের ধানে অনেক সময় দাগ দেখা যায় জাতটি ছিটিয়ে, লাইন করে  এবং ডিবলিং করা যায়। বোনা আউশের জাতটি দেশের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে, বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ময়মনসিংহ জেলার জন্য উপযোগী

বিআর ২১ :  ধানের জনপ্রিয় নাম নিয়ামত। জাতটি ছিটিয়ে,লাইন করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে বোনা যেতে পারে। বোনা আউশের জাতটি দেশের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে, বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ময়মনসিংহ জেলার জন্য উপযোগী

 বিআর ২২ : আমন মৌসুমের উপযোগী। ধানের নাম কিরণ। এটি একটি আলোক সংবেদনশীল নাবী জাত। ঠিক নাইজারশইলের মতো। এর চাল আর নাইজারশাইলের মধ্যে পার্থক্য নেই বললেই চলে; আবার ফলনও হয় দ্বিগুণ। দেশের বন্যাপ্রবণ এলাকায় বন্যা পরবর্তী সময়ে যে জমিতে যেভাবে নাইজারশাইলের চারা রোপণ করা হয় সে সময়ে ওই জমিতে একই নিয়মে কিরণ রোপণ করা যাবে। কিরণে প্রতি হেক্টর টন ফলনও বেশি পাওয়া যাবে। রোপণের পর কিছু পরিচর্যা, যেমন জমিতে পানি সংরক্ষণ পরিমাণ মতো নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করতে হয়। জোয়ার-ভাটা অঞ্চলে কিরণ ধানের ৪০-৫০ দিনের চারা -১৫ আশ্বিন পর্যন- রোপণ করা যায়। ১৫ আশ্বিনের পর ধান রোপণ করা উচিত নয়। প্রচলিত কুমড়াগইর, সাদামোটা ইত্যাদি ধানের সাথেই ধান কাটা যায় এবং প্রতি হেক্টরে কমপক্ষে টন ফলন বেশি পাওয়া যায়। 

 বিআর ২৩ :  ধানের জনপ্রিয় নাম দিশারী। ধানের চারা গাছ বেশ উঁচু কান্ড খুবই শক্ত। এটি একটি আলোক-সংবেদনশীল নাবী জাত। তাছাড়া ধান কিছুটা লবনাক্ততা সহনশীল। এসব গুণাবলীর  জন্য জাতটি খুলনা  বাগেরহাট অঞ্চলে রোপা আমনে খুবই জনপ্রিয়। বিআর ২২ ধানের মতোই বিআর ২৩ বন্যা-পরবর্তী এবং জোয়ার ভাটা অঞ্চলে নাবী রোপা আমন হিসেবে চাষাবাদের জন্য উপযোগী

 বিআর ২৪ : আউশ মৌসুমের উপযোগী। ধানের জনপ্রিয় নাম রহমত। জাতের গাছ খুবই শক্ত। ফুল ফোটার সময় শীষ ডিগপাতার উপর থাকে এবং সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ধানের চাল খুবই সুন্দর। জাতটি ছিটিয়ে,লাইন করে  এবং ডিবলিং  পদ্ধতিতে বোনা যায়। রহমত কেবল বৃষ্টিবহুল এলাকার  জন্য উপযোগী

 বিআর ২৫ : আমন মৌসুমের উপযোগী ধানের জনপ্রিয় নাম নয়াপাজাম। ধানের রং আকৃতি এবং চালের আকার একদম পাজামের মতো। উপরন্তু ধান - দিন আগাম, গাছ অনেক মজবুত এবং ফলন দেয় বেশি। ধানের জীবন কাল মধ্য মমেয়াদী। তাই আষাঢ়ের শুরুতে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে কেটে রবি ফসল চাষাবাদ করা যায়। 

 বিআর ২৬ : বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এটিকে রোপা আউশের জাত হিসেবে চুড়ান্ত ভাবে নির্বচান করা হয়। ধানের জনপ্রিয় নাম শ্রাবণী। এটি আগাম জাত। এর কান্ড শক্ত এবং ফুল ফোটার সময় শীষ ডিগপাতার উপর থাকে। তাই সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এর চাল বালামের অনুরূপ। কিন্তু ভাত নরম কিছুটা আঠালো। ধান শুকানোর পর দুই তিন মাস  সংরক্ষণ করলে আঠালো ভাব অনেকাংশে দুরীভুত হয়

 ব্রি ধান ২৭ : ধানের গোড়ার দিকে পাতার খোল কিছুটা বেগুনি রঙের এবং ধানের মাথায় বেগুনি রঙের ফোঁটা আছে। ধান পাকার সাথে সাথে ফোঁটা ঝরে পড়ে যায়। জাতের গাছ উঁচু হলেও কিছুটা ঢলে পড়া প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। স্থানীয় জাত গুলো যখন ধান পাকার আগেই ঢলে পড়ে যায় তখন ধান মজবুতির সাথে দাঁড়িয়ে থাকে। বরিশাল পটুয়াখালী জেলার অলবণাক্ত জেয়ার-ভাটা কবলিত জমিতে বোনা রোপা আউশ হিসেবে চাষাবাদের জন্য জাতটি খুবই উপযোগী

 ব্রি ধান ২৮ : এটি বোরো মৌসুমের আগাম জাত হিসেবে অনুমোদন লাভ করে। ধানের ডিগপাতা হেলে যায় এবং শীষ উপরে  থাকে; ফলনেও ভাল তাই এর জনপ্রিয়তা ঘরে ঘরে।  

 ব্রি ধান ২৯ : এটা বোরো মৌসুমের আগাম নাবী জাতের ধান। এর সার গ্রহণ ক্ষমতা যেমন বেশি তেমনে কান্ড মজবুত আর ফলনের পরিমাণ সর্বোচ্চ গুনে মানে ব্রি ধান ২৯ সকল আধুনিক ধানের সেরা

 ব্রি ধান ৩০ : আমন মৌসুমের জাতের ধানের আকার, রঙ, গাছের এবং জীবনকাল প্রায় বিআর-১০ এর মতো। পার্থক্য শুধু ডিগপাতায় যা শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ক্রমশ সুচালু। এর স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতা আছে। তাই এর আবাদ পদ্ধতি বিআর ১০ এর অনুরূপ।  

 ব্রি ধান ৩১ : আমন মৌসুমের ধানে মৃদু আলোক-সংবেদনশীলতা থাকলেও বিআর ১১ এর চেয়ে - দিন আগাম। ধানের রঙ আকৃতি বিআর ১১ এর মতোই, তবে আকারে একটু বড়। শীষ দেখতে আকর্ষণীয়, ধানের গাঁথুনি ঘন এবং শীষের গোড়ায় কিছু চিটা হয়। ধানের চাষাবাদ বিআর ১০ বা বিআর ১১ এর অনুরূপ

 ব্রিধান ৩২ : জাতটি আলোক-সংবেদনশীল নয় বলে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসের মধ্যে যখনই বীজ বপন করা হোক না কেন এর জীবনকাল ১৩০ দিন। সুবাদে জমিভেদে জাতের বপন-রোপণ নির্ধারণ করে অতি সহজেই রবি ফসল, যেমন গম, সরিষা ইত্যাদি সঠিক সময়ে বপন করা যায়। ধান গাছের মজবুতি কিছুটা কম বলে ঢলে পড়ার প্রবণতা দেখা যায়। সঠিক মাত্রায় সার ব্যবহারে তা অনেকটা প্রতিরোধ করা যায়। আবার ভাদ্রেও প্রথম সপ্তাহে রোপণ করলে গাছের উচ্চতা কমে এবং কান্ডের মজবুতি বাড়ে

 ব্রি ধান ৩৩ : এটি রোপা আমনের সবচাইতে আগাম জাত এবং কোন আলোক সংবেদনশীলতা নেই জন্য ব্রি ধান-৩২ এর মতো ধানের চাষাবাদের পর অনায়াসেই সব রকম রবি ফসল করা যায়। এর কান্ড মজবুত। গাছের পাতা প্রচলিত জাতের চেয়ে সামান্য চওড়া এবং ডিগপাতায় আগার দিক থেকে - সেন্টিমিটার নিচে কোঁচকানো ভাঁজ আছে। ধানের খোসায় ভাঁজে ভাঁজে হালকা বাদামি রঙ আছে। জাতটি আগাম তাই এর বীজ বপনের তারিখটি তালিকা দেখে নিতে হবে। আগাম বপন করলে আগাম পাকবে। তবে তাতে ইঁদুর, পোকা, বৃষ্টি ইত্যাদিতে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকবে

 ব্রি ধান ৩৪ : এটি একটি সুগন্ধি জাত। ধান কালিজিরা ধানের মতো ছোট এবং ঘ্রাণ কালিজিরার কাছাকাছি। আমন মৌসুমের ধানের চাল পোলাও তৈরির জন্য খুবই উপযোগী। ধানে আলোক সংবেদনশীলতা আছে। গাছ বেশ দুর্বল। তাই ফলন বৃদ্ধিও জন্য এর বপন কিছুটা পরে অর্থাৎ শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে করা উচিত

 ব্রি ধান ৩৫ : এটি বাদামি গাছফড়িং প্রতিরোধশীল জাত হিসেবে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে

 

ব্রি ধান ৩৬ : এটি ঠান্ডা সহিষ্ণু বোর ধানের জাত হিসেবে নির্বাচন করা হয় এবং ব্রি ধান ৩৬ নামে অনুমোদন লাভ করে। ব্রি ধান-২৮ এর মতোই এটি একটি আগাম জাত এবং চাল বালামের মতো

 

ব্রি ধান ৩৭ : রোপা আমন মৌসুমের ধানের গাছ কাটারিভোগের চেয়ে অনেক মজবুত, কিন' - দিন নাবী। ধানের রঙ, চালের আকার ঘ্রাণ ঠিক কাটারিভোগের অনুরূপ।এ ধানের শীষ দেখতে আকর্ষণীয় এবং শীষে ধানের গাঁথুনি বেশ ঘন। ধানের শেষপ্রান- একটু বাঁকা এবং সুচালো থেকে ছোট শুঙ দেখা যায়। এর ভাত পোলাও কাটারিভোগের সমতুল্য। জাতটি আলোক সংবেদনশীল। অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করতে শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে বীজ বপন করা এবং প্রয়োজনে সম্পূরক সেচ দিতে হবে

 

ব্রিধান ৩৮ :  এর গাছ বাসমতি (ডি)-এর চেয়ে অনেক মজবুত। ধানের রঙ শুঙ সোনালী সাদা। ব্রিধান ৩৮ এর চাল ঘ্রাণ বাসমতি (ডি) এর অনুরূপ। ভাত পোলাও দুটোই খুব সুন্দর। ধানের চালে সুগন্ধি আছে। রোপা আমনের জাতটি আলোক সংবেদনশীল। অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করতে শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে বীজ বপন করা এবং প্রয়োজনে সম্পূরক সেচ দিতে হবে

 

ব্রিধান ৩৯ : রোপা আমন মৌসুমের উপযোগী ধানের কান্ড মজবুত, তাই ঢলে পড়ে না। প্রচলিত জাতের চেয়ে এর ডিগপাতা একটু চওড়া এবং খাড়া। ব্রিধান ৩২ ব্রি ধান ৩৩ এর মতো জাতের বীজ বপন রোপণের তারিখ নির্ধারণ করে পরবর্তী রবি ফসল করা যায়। তবে জাতের ধান কোন ক্রমেই শ্রাবণ মাস শুরু হওয়ার আগে বপন করা উচিত নয়; কারণ জাতটি ফুল ফোটার সময় উচ্চতাপ সহনশীল নয়। 

 

ব্রি হাইব্রিড ধান : ব্রি উদ্ভাবিত প্রথম হাইব্রিড ধানের জাতটি ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে প্রায় টন বেশি ফলন দেয়। এটি যশোর বরিশাল অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে। এর কান্ড পাতা ঘন সবুজ খাড়া কান্ড শক্ত বলে গাছ হেলে পড়ে না। ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি একটু আলাদা

 

ব্রি ধান ৪০ : এটি একটি সংবেদনশীল ধান। ধান চারা থোড় অবস্থায় ডিএস/মিটার লবণাক্ততা প্রতিরোধ করতে পারে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের যে জমিতে রাজাশাইল, কাজলশাইল, পাটনাই, মরিচশাইল ইত্যাদি স্থানীয় জাতের চাষাবাদ হচ্ছে সব জমিতে জাতের প্রতি হেক্টরে ফলন .-. টন। জাতের গাছ মজবুত। প্রচলিত জাতের মতো এর ডিগপাতা একটু চওড়া, কিন্তু গাছ উচ্চতায় অনেকটা ছোট। জাতের জীবনকাল কাজলশাইলের সমান এবং পাটনাই মরিচশাইলের চেয়ে -১৫ দিন আগাম। জাতটি আলোক সংবেদনশীল হওয়ায় প্রয়োজনে ৩০-৫০ দিনের চারা এক হাঁটু পরিমাণ(২৫-৩০ সেন্টিমিটার) পানিতে সহজেই রোপণ করা যায়। চালের পেটে কিঞ্চিত সাদাটে দাগ আছে। ধান সিদ্ধ করলে তা থাকে না। এর শীষের অগ্রভাগের কোন কোন ধানে শুঙ থাকে।
ব্রি ধান ৪১ : এটি রোপা আমন মৌসুমের উপযোগী একটি আলোক সংবেদনশীল ধান। ধান চারা থোড় অবস্থায় ডিএস/মিটার লবণাক্ততা প্রতিরোধ করতে পারে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের যে জমিতে রাজাশাইল, কাজলশাইল, পাটনাই, মরিচশাইল ইত্যাদি স্থানীয় জাতের চাষাবাদ হচ্ছে সব জমিতে জাতের প্রতি হেক্টরে ফলন .-. টন। জাতের গাছ মজবুত। প্রচলিত জাতের মতো এর ডিগপাতা একটু চওড়া, কিন্তু গাছ উচ্চতায় অনেকটা ছোট। এর জীবনকাল ব্রি ধান ৪০-এর চেয়ে এক সপ্তাহ নাবী। জাতটির চারা প্রয়োজনে ৩০-৫০ দিনের হলে এক হাঁটু পরিমাণ পানিতে সহজেই রোপণ করা যায়। ধানে কোন শুঙ নেই। আবার দেখতে বিআর ২৩ এর অনুরূপ, কিন' জীবনকাল -১০ দিন আগাম

 

 ব্রি ধান ৪২ : ফলন প্রতি হেক্টর . টন। এটি বোনা আউশের আগাম জাত এবং মোটামুটি ক্ষরা সহিষ্ণু। বোনা আউশ মৌসুমে দেশের খরাপ্রবণ এলাকা বিশেষ করে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা এবং বৃষ্টিবহুল উভয় এলাকায় চাষাবাদের জন্য জাতটি উপযোগী। এটি ছিটিয়ে, লাইন করে ডিবলিং পদ্ধতিতে বোনা যায়। 
ব্রি ধান ৪৩ : ফলন প্রতি হেক্টর . টন। এর কান্ড শক্ত। তাই সহজে বাতাসে গাছ হেলে পড়ে না। শীষের উপরি ভাগের - টা ধানের ছোট শুঙ দেখা যায়। জাতটি মোটামুটি খরা সহিষ্ণু এবং আগাম বোনা আউশ মৌসুমে দেশের খরাপ্রবণ এলাকা বিশেষ করে ঝিনাইদহ,কুষ্টিয়া, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা এবং বৃষ্টিবহুল উভয় এলাকার জন্য জাতটি উপযোগী। এটি ছিটিয়ে,লাইন করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে বপন করা যায়।
ব্রি ধান ৪৪ : এটি দেশের জোয়ার ভাটা অঞ্চলের একটি রোপা আমন ধানের জাত। ধান দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষকদের কাছে জনপ্রিয়। বিআর ১১-এর মতোই ধান স্বাভাবিক রোপা আমনে চাষ করা যায়, তবে অলবণাক্ত জোয়ার ভাটা এলাকায় যেখানে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত জোয়ারের পানি আসে সেখানে চাষের উপযোগী। জাতটি কিছুটা টুংরো রোগ প্রতিরোধী। স্থানীয় জাত মৌ লতার চেয়ে এর ফলন প্রায় দ্বিগুণ এবং জোয়ার ভাটা প্রবণ জমিতে বিআর ১১ ব্রিধান ৩১ এর চেয়ে ফলন প্রতি হেক্টরে টন বেশি। জাতটি বিআর ১১ এর চাইতে ১০-১৫ সেন্টিমিটার লম্বা হওয়া সত্বেও কান্ড শক্ত থাকায় সহজে হেলে পড়ে না। এর চাল মোটা হওয়ায় এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের কাছে প্রিয়। 
ব্রি ধান ৪৫ : এটি বোরো মৌসুমে আগাম জাত হিসেবে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে। এর গাছ ব্রি ধান ২৮ এর চেয়ে অধিক মজবুত। ডিগপাতা লম্বা এবং খাড়া। এর জীবনকাল ব্রি ধান ২৮- এর সমান, কিন্তু ফলন বেশি

 

ব্রি ধান ৪৬ : রোপা আমন মৌসুসের উপযোগী। জাতটি আলোক সংবেদনশীলতায় ঠিক নাইজারশাইলের মতো। তাই দেশের বন্যা প্রবণ এলাকায় এর নাবীতে রোপণের উপযোগিতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, ১০-১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৫-৩০ দিনের চারা রোপণ করলে প্রচলিত নাইজারশাইল এবং বিআর ২২-এর চেয়ে ব্রি ধান ৪৬ প্রতি হেক্টরে .-. টন ফলন বেশি দেয়। কিন' জীবনকাল বিআর ২২-এর সমান। জাতের গাছের আকৃতি ধান দেখতে বিআর ১১ এর মতো। জাতটি নাবীতে রোপণ ছাড়াও প্রচলিত রোপা আমনের জাত হিসেবেও চাষাবাদ করা যায়।
ব্রি ধান ৪৭ :  জাতটি সাতক্ষীরার লবণাক্ত এলাকায় বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য নির্বাচন করা হয়। জাতটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এটি চারা অবস্থায় ১২-১৪ ডিএস/মিটার এবং বাকি জীবনকালব্যাপী ডিএস/মিটার লবণাক্ততা প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। জাতটির ডিগপাতা ব্রি ধান ২৮- এর চেয়ে চওড়া, খাড়া এবং লম্বা। এর চালের পেটে সাদা দাগ আছে তবে ধান সিদ্ধ করলে সাদা দাগ থাকে না। জাতটি লবণাক্ত অঞ্চলের যেখানে সেচের পানির লবণাক্ততা মাত্রা ডিএস/মিটার পর্যন- আছে সেখানে অনায়াসেই বোরো মৌসুমে এর আবাদ করা যাবে। 

 

ব্রি ধান ৪৮ : ধারে জাত অবমুক্তির বছর ২০০৮ মৌসুম আউশ, উচ্চতা ১০৫ সেমি, জীবনকাল ১১০ দিন,জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি মোটা, ভাত ঝরঝরে, ধানের গড় ফলন . টন/হেক্টর

 

ব্রি ধান ৪৯ : ধারে জাত অবমুক্তির বছর ২০০৮ মৌসুম আমন, উচ্চতা ১০০ সেমি, জীবনকাল ১৩৫ দিন,জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি চিকন,নাইজারশাইলের মতো এবং বিআর ১১ থেকে দিন আগাম, ভাত ঝরঝরে, ধানের গড় ফলন . টন/হেক্টর

 

ব্রি ধান ৫০ : ধারে জাত অবমুক্তির বছর ২০০৮(বাংলামতি) মৌসুম বোরো, উচ্চতা ৮২ সেমি, জীবনকাল ১৫৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল লম্ব,চিকন, সুগন্ধি সাদা, ধানের গড় ফলন . টন/হেক্টর

 

ব্রি হাইব্রিড ধান : ধারে জাত অবমুক্তির বছর ২০০১ মৌসুম বোরো, উচ্চতা ১১০ সেমি, জীবনকাল ১১৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি চিকন, স্বাচ্ছ সাদা, ধানের গড় ফলন . টন/হেক্টর

 

ব্রি হাইব্রিড ধান : ধারে জাত অবমুক্তির বছর ২০০৮ মৌসুম বোরো, উচ্চতা ১০৫ সেমি, জীবনকাল ১৪৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি মোটা এবং আগাম, ধানের গড় ফলন . টন/হেক্টর

 

ব্রি হাইব্রিড ধান  : ধারে জাত অবমুক্তির বছর ২০০৯ মৌসুম বোরো, উচ্চতা ১১০ সেমি, জীবনকাল ১৪৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি মোটা এবং আগাম, ধানের গড় ফলন . টন/হেক্টর

 

বীজ বাছাই

বপনের জন্য রোগমুক্ত, পরিস্কার পরিপুষ্ট বীজ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের লক্ষ্যে ভালভাবে বীজ বাছাইয়ের জন্য নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
প্রায় ৪০ লিটার পরিস্কার পানিতে দেড় কেজি ইউরিয়া সার মিশিয়ে দিন। এবার ৪০ কেজি বীজ ছেড়ে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দিন। ভারী, পুষ্ট, সুস্থ সবল বীজ ডুবে নিচে জমা হবে এবং অপরিপুষ্ট, হালকা, রোগা বা ভাঙ্গা বীজ ভেসে উঠবে। হাত অথবা চালনি দিয়ে ভাসমান বীজগুলো পৃথক করে নিন। ভারী বীজ নিচ থেকে তুলে নিয়ে পরিস্কার পানিতে - বার ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। ইউরিয়া মিশানো পানি সার হিসাবে বীজতলায় ব্যবহার করা যায়। কুলা দিয়ে ঝেড়ে বীজ বাছাই পদ্ধতি প্রচলিত আছে।  এতে চিটা দূর হলেও অপরিপুষ্ট বীজ দূরীভূত হয় না

ভালো বীজ নির্বাচনঃ

ভাল বীজের বৈশিষ্ট্যঃ রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট চিটামুক্ত হতে হবে।

সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।

ভাল বীজ বাছাইয়ের পদ্ধতিঃ প্রায় ৪০ লিটার পরিষ্কার পানিতে দেড় কেজি ইউরিয়া সার মিশিয়ে তার মধ্যে বীজ ধান ছেড়ে দিয়ে নেড়েচেড়ে দিতে হব। ভারী, পুষ্ট, সুস্থ সবল বীজ পাত্রের তলায় জমা হবে এবং অপরিপুষ্ট, হালকা, রোগা বা ভাঙ্গা বীজ ভেসে থাকবে। হাত অথবা চালনি দিয়ে ভাসমান বীজগুলো পৃথক করে নিতে হবে। ভারী বীজ নীচ থেকে তুলে নিয়ে পরিষ্কার পানিতে থেকে বার ভাল করে ধুয়ে ছায়াতে শুকিয়ে অথবা এভাবে বাছাইকৃত বীজ জাগ দিয়ে মুখ ফুটিয়ে বীজতলায় বোনা যেতে পারে। তাছাড়া কুলা দিয়ে খুব ভালোভাবে ঝেড়ে নিয়েও পরিপুষ্ট বীজ বাছাই করা যায়।

বিশেষ পরামর্শঃ বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে এবং ভালো সুষ্ঠ বীজ নির্বাচনের জন্য কৃষক, নমুনা বীজ মাঠ পর্যায়ে পরিক্ষা করতে পারেন, ক্ষেত্রে বীজ গজানোর হার ৮০% এর বেশী হবে।

বীজের হারঃ সাধারন ভাবে কেজি অংকুরিত বীজ শতক বীজ তলার জন্যে এবং শতাংশের বীজ তলা দিয়ে ২২-২৫ শতাংশ জমিতে রোপন করা যায়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটে লেখা নির্দেশিকা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

বীজ শোধনঃ ভিটাভেক্স ২০০ / টিলথ অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করে বীজ় শোধন করা ভাল

বীজতলা তৈরি

বীজতলা তৈরির আগে সারণী দেখে জেনে নিতে হবে কখন কোন জাতের ধানের বীজ বীজতলায় বপন করতে হবে। চারটি পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করা যায়। এগুলো হচ্ছে শুকনো, কাদাময়, ভাসমান ডাপোগ বীজতলা।

শুকনো বীজতলা

উপযুক্ত আদ্রতায় - বার চাষ মই দিয়ে মাটিকে একেবারে ঝুরঝুরে করার পর জমি সমান করতে হবে। এবার এক মিটার চওড়া করে জমির দৈর্ঘ্য বরাবরে বেড তৈরি করতে হবে। বেডের পাশে পানি নিস্কাশনের জন্য ২৫-৩০ সেন্টিমিটার চওড়া নালা তৈরি করতে হবে। বেডের উপরিভাগের মাটি ভালোভাবে সমান করার পর শুকনো বীজ সমান ভাবে ছিটিয়ে দিন। এখন উপরের মাটি এমনভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে যেন বীজগুলো .-. সেন্টিমিটার (.-. ইঞ্চি) মাটির নিচে চলে যায়। কাজকে সহজ করতে ধুলা-মাটির আস্তরণ দেওয়া যায়। বেডের মাটিতে প্রয়োজনীয় আদ্রতা নিশ্চিত করার জন্য নালা ভর্তি করে সেচ দেওয়া উচিত।

কাদাময় বীজতলা

দোঁআশ এটেল মাটি বীজতলার জন্য ভাল। প্রতি বর্গমিটার জমিতে দুই কেজি হারে জৈব সার ছড়িয়ে দিতে হবে। এরপর জমিতে - সেন্টিমিটার পানি দিয়ে দু-তিনটি চাষ মই দিয়ে থেকে ১০ দিন রেখে দিন এবং পানি আটকিয়ে রাখুন। আগাছা, খড় ইত্যাদি পচে গেলে আবার চাষ মই দিয়ে থকথকে কাদাময় করে জমি তৈরি করতে হবে। এবার এক মিটার চওড়া করে জমির দৈর্ঘ বরাবরে বেড তৈরি করতে হবে। বেডের পাশে পানি নিস্কাশনের জন্য ২৫-৩০ সেন্টিমিটার চওড়া নালা তৈরি করতে হবে। বেডের উপরের মাটি বাঁশ বা কাঠের চ্যাপ্টা লাঠি দিয়ে সমান করতে হবে। কাদা বেশি হলে বীজ মাটিতে ডুবে যাবে এবং তাতে ভালভাবে বীজ গজাবে না। অবস্থায় বেড তৈরির / ঘন্টা পর বীজ বোনা দরকার।

ভাসমান বীজতলা

বন্যা কবলিত এলাকায় যদি বীজতলা করার মতো উঁচু জায়গা না থাকে বা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চারা তৈরির প্রয়োজনীয় সময় না পাওয়া যায় তাহলে বন্যার পানি, পুকুর, ডোবা বা খালের পানির উপর বাঁশের চাটাইয়ের মাচা বা কলাগাছের ভেলা করে তার উপর - সেন্টিমিটার পরিমাণ কাদার প্রলেপ দিয়ে ভেজা বীজতলার মত ভাসমান বীজতলা তৈরি করা যায়। বন্যার পানিতে যাতে ভেসে না যায় সেজন্য বীজতলা দড়ি বা তার দিয়ে খুঁটির সাথে বেঁধে রাখা দরকার। পানিতে ভাসমান থাকায় বীজতলায় পানি সেচের দরকার হয় না।

ডাপোগ বীজতলা

বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ডাপোগ বীজতলা করা যায়। বাড়ীর উঠান, পাকা বারান্দা বা যে কোন শুকনো জায়গায় চারিদিকে মাটি,াঠ,ইট বা কলাগাছের বাকল দিয়ে চৌকোণা করে নিতে হবে। এবার কলাপাতা বা পলিথিন বিছিয়ে তার উপর ঘন করে অঙ্কুরিত বীজ বুনতে হবে। বীজতলার নীচে আচ্ছাদন থাকায় চারা মাটি থেকে কোনরূপ খাদ্য বা পানি পায় না বলে - ঘন্টা পরপর ভিজিয়ে দিতে হবে এবং দুসপ্তাহের মধ্যেই চারা তুলে রোপন করতে হবে।  অন্যথায় চারা খাদ্যের অভাবে মারা যেতে পারে

বীজ জাগ দেওয়া

বাছাইকৃত বীজ কাপড় বা চটের ব্যাগে ভরে ঢিলা করে বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে রাখুন ২৪ ঘন্টা। এরপর বীজের পোটলা পানি থেকে তুলে ইট বা কাঠের উপর ঘন্টাকানেক রেখে দিন পানি ঝরার জন্য। এবার বাঁশের টুকরি বা ড্রামে / পরত শুকনো খড় বিছিয়ে তার উপর বীজের পোটলা রাখুন এবং আবারও / পরত শুকনো খড় দিয়ে ভালোভাবে চেপে তার উপর ইট বা কাঠ অথবা যেকোন ভারি জিনিস দিয়ে চাপা দিন। এভাবে জাগ দিলে ৪৮ ঘন্টা বা দিনেই ভালো বীজের অঙ্কুর বের হবে এবং কাদাময় বীজতলায় বপনের উপযুক্ত হবে

বীজতলায় বপন

সতেজ সবল চারা আমাদের প্রধান কাম্য। তাই বাছাইকৃত বীজ ওজন করে নিতে হবে। প্রতি বর্গমিটার বীজতলায় ৮০-১০০ গ্রাম বীজ বোনা দরকার। এরূপ বর্গমিটার বীজতলার চারা দিয়ে ২৫-৩০ বর্গমিটার জমি রোপণ করা যাবে। উল্লেখ্য যে,াপোগ বীজতলার জন্য প্রতি বর্গমিটারে .-. কেজি বীজ বুনতে হবে এবং শুকনো বীজতলার জন্য বীজ জাগ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ভেজা বীজতলায় বীজ বেডের উপর থাকে বলে পাখিদের নজরে পড়ে। তাই বপনের সময় থেকে / দিন পর্যন্ত  পাহারা দিতে হবে। সারণী - জাত-ভিত্তিক বীজ বপনের সময় উল্লেখ করা হয়েছে

বীজতলার পরিচর্যা

বীজতলায় সব সময় নালা ভর্তি পানি রাখা দরকার। বীজ গজানোর - দিন পর বেডের উপর - সেন্টিমিটার পানি রাখলে আগাছা পাখির আক্রমণ নিয়ন্ত্রন করা যায়। বোরো মৌসুমে শীতের জন্য চারার বাড়বাড়তি ব্যহত হয়। একারণে রাতে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলে ঠান্ডাজনিত ক্ষতি থেকে চারা রক্ষা পায় এবং চারার বাড়বাড়তি বৃদ্ধি পায়। বীজতলায় আগাছা, পোকামাকড় রোগবালাই দেখা দিলে তা দমন করার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। বীজতলায় চারাগাছ হলদে হয়ে গেলে প্রতি বর্গমিটারে গ্রাম করে ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করলেই চলে। ইউরিয়া প্রয়োগের পর চারা সবুজ না হলে গন্ধকের অভাব হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। তখন প্রতি বর্গমিটারে ১০ গ্রাম করে জিপসাম সার উপরিপ্রয়োগ করা দরকার। ইউরিয়া সার উপরি-প্রয়োগের পর বীজতলার পানি নিস্কাশন করা উচিত নয়

চারা উঠানো বহন

চারা উঠানো

চারা উঠানোর আগে বীজতলায় বেশি করে পানি দিতে হবে যাতে বেডের মাটি ভিজে একেবারে নরম হয়ে যায়। চারা উঠাতে এমন সাবধানতা নিতে হবে যেন চারাগাছের কাণ্ড মুচড়ে বা ভেঙ্গে না যায়। উঠানো চারার মাটি কাঠ বা হাতে আছাড় না দিয়ে আস্তে আস্তে পানিতে নাড়াচাড়া দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, চারাগাছের শিকড়  ছিঁড়ে গেলেও রোপনের পর চারার বাড়-বাড়তির কোনরূপ অসুবিধা হয় না কিন্তু কান্ড মুচড়ে গেলে চারাগাছের বেশ ক্ষতি হয়। এজন্য চারা উঠানোর পর চারার পাতা দিয়ে বান্ডিল বাঁধাও উচিত নয়। শুকনো খড় ভিজিয়ে নিয়ে বান্ডিল বাঁধতে হবে।

চারা বহন

বীজতলা থেকে রোপণ ক্ষেতে চারা বহন করার সময় পাতা কান্ড মোড়ানো রোধ করতে হবে। এজন্য ঝুড়ি বা টুকরিতে  াজিয়ে চারা বহন করা উচিত। বস্তাবন্দী করে ধানের চারা বহন করা উচিত নয়

রোপনের জন্য জমি তৈরি

জমিতে হেক্টরপ্রতি - টন জৈবসার ছিটিয়ে দিন। এখন -১০ সেন্টিমিটার পানি দিয়ে দুটি চাষ আড়াআড়ি ভাবে দিয়ে - দিন অপেক্ষা করতে হবে। এবার ১০-১৫ সেন্টিমিটার গভীর করে আড়াআড়ি ভাবে দুটি চাষ দুটি মই দিয়ে - দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর দিতে হবে শেষ চাষ। চাষের আগেই ইউরিয়া সারের ১ম কিস্তি এবং সম্পূর্ণ ফসফেট, পটাশ, জিপসাম দস্তা সার ছিটিয়ে চাষ শুরু করতে হবে। সারের পরিমাণ সার ব্যবস্থাপনা অংশ থেকে দেখে নিতে হবে

চারা রোপন

চারার বয়স

ভাল ফলন পেতে হলে উপযুক্ত বয়সের চারা রোপন করা জরুরি সারণী তে জাত মৌসুম ভেদে চারার বয়স উল্লেখ করা হয়েছে সাধারণ ভাবে আউশে ২০-২৫ দিন, রোপা আমনে ২৫-৩০ দিন এবং বোরাতে ৩৫-৪৫ দিন হওয়া উচিত

রোপনের নিয়ম

রোপনের সময় জমিতে ছিপছিপে পানি থাকলেই চলে প্রতি গুছিতে - টি চারা রোপন করা ভাল। মাটির - সেমি গভীরতাই চারা রোপন করা উত্তম। সঠিক গভীরতায় চারা রোপন করলে চারার বৃদ্ধি দ্রুত শুরু হয় এবং কুশির সংখ্যা বেশি হয়

চারা রোপনের দূরত্ব

সারিবদ্ধ ভাবে চারা রোপন করতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব বজায় রাখতে হবে (সারণী-) বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ নির্দিষ্ট পরিমান জমিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক গুছি থাকলে নির্দিষ্ট ফলন হবে। আবার সারিবদ্ধ চারা রোপন করলে নিরানি যন্ত্র ব্যবহার করা যায় তাতে খরচ কমবে। গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে চারার দূরত্ব সঠিক হতে হবে। উপরন্তু সঠিক দূরত্বে চারা রোপন হলে প্রত্যেক গাছ সমানভাবে আলো, বাতাস সার গ্রহণের সুবিধা পাবে; আর তা ভাল ফলনে সহায়তা দিবে।
 
বিকল্প চারা

বন্যা কিংবা অন্য কোন প্রাকৃতিক কারনে ফসল নষ্ট হলে যেসব জায়গায় ধান নষ্ট হয়নি সেখান থেকে কুশি ভেঙ্গে নিয়ে অন্যত্র রোপন করা যায়। এতে ফলনের কোন ঘাটতি দেখা যায় না। প্রতিটি গোছা থেকে - টি কুশি রেখে বাকিগুলো আলাদা করে অন্য জায়গায় প্রতি গোছায় দুটি করে রোপন করলেও ভাল ফলন পাওয়া যায়

সার ব্যবস্থাপনা

সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার ফসল, মাটি এবং পরিবেশের জন্য ভাল এজন্য প্রথমে জানতে হবে কৃষি পরিবেশ অঞ্চল ভিত্তিক মাটির উর্বরতা শ্রেণী ( সারণী ) এবং জেনে নিতে হবে জমি কোন কৃষি পরিবেশ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত সে অনুযায়ী সারণী - মৌসুম-ভিত্তিক সারের সুষম মাত্রার সুপারিশ দেওয়া আছে
ফসফেট, পটাশ, জিপসাম দস্তা সারের প্রভাব পরবর্তী ফসল পর্যন্ত থাকে জন্য রবি ফসলে ফসফেট, পটাশ জিপসাম সার সারণী মোতাবেক ব্যবহার করলে দ্বিতীয় ফসলে উল্লিখিত সারগুলোরে মাত্রা অর্ধেক পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে দস্তা সার একবার প্রয়োগ করলে তা পরের তিন ফসলে প্রয়োগ করতে হবে না সারণী - জাত মৌসুম ভিত্তিক ইউরিয়া উপরি-প্রয়োগের সময় কিস্তি উল্লেখ করা হয়েছে
ইউরিয়া সারের কার্যকারিতা জমিতে কম সময় থাকে তাই সার কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে ১ম কিস্তি জমি তৈরির শেষ পর্যায়ে, ২য় কিস্তি ধানের গোছায় -৫টি কুশি অবস্থায় ৩য় কিস্তি কাইচথোড় আসার - পূর্বে দিতে হবে যে সব জাতের জীবণকাল ১৫০ দিনের বেশি সেক্ষেত্রে জমি তৈরির সময় ইউরিয়া প্রথম কিস্তি এবং পরে সমান তিন কিস্তিতে উপরিপ্রয়োগ করতে হবে
ইউরিয়া উপরি-প্রয়োগের সময় মাটিতে অবশ্যই প্রচুর রস থাকতে হবে সবচাইতে ভাল হয় যদি ক্ষেতে - সেন্টিমিটার পানি থাকে ইউরিয়া প্রয়োগের সাথে সাথে হাতে বা উইডার দিয়ে আগাছা পরিস্কার করা দরকার
ইউরিয়া সার প্রয়োগের পরেও ধানগাছ যদি হলদে থাকে এবং বাড়বাড়তি কম হয় তাহলে  গন্ধকের অভাব হয়েছে ধরে নেওয়া যায় সে ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হবে এরপর হেক্টরপ্রতি ৬০ কেজি বা বিঘাপ্রতি কেজি জিপসাম সার উপরি-প্রয়োগ করলে ফল পাওয়া যাবে
যদি ধানগাছ মাঝেমধ্যে খাটো হয়ে বসে যায় এবং পুরাতন পাতায় মরচে পড়া বাদামী  থেকে কমলা রঙ ধারণ করে এবং ধানের কুশি কম থাকে তখন ধরে নিতে হবে  দস্তার অভাব হয়েছে ক্ষেত্রে  জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হবে এরপর হেক্টরপ্রতি ১০ কেজি বা বিঘাপ্রতি কেজি ৩৫০ গ্রাম দস্তা সার উপরি-প্রয়োগ করতে হবে অন্যথায় হেক্টরপ্রতি .-. কেজি জিংক সালফেট ১২৫-১৫০ গ্যালন পরিস্কার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে মেশিনের সাহায্যে দুকিস্তিতে যথাক্রমে রোপণের ১০-১৫ ৩০-৩৫ দিন পর ধানগাছের পাতার উপর ছিটিয়ে দিলে ভাল ফল পাওয়া যায় এভাবে মূল্যবান দস্তা সারের অপচয় রোধ করা সম্ভব

সার ব্যবস্থাপনা ছক:-

জমির উর্বরতা

প্রতি শতাংশে সারের পরিমাণ (গ্রাম)

 

ইউরিয়া

টিএসপি/ডিএপি

এমপি

জিপসাম

জিঙ্ক

 

অতি নিম্ন

১৪০০

৪৯০

৭০০

৩১৫

৬২

 

অতি নিম্ন

১২০০

৪২০

৬০০

২৭০

৫০

 

নিম্ন

১০০০

৩৫০

৫০০

২২৫

৩৭

 

নিম্ন মধ্যম

৮০০

২৮০

৪০০

১৮০

২৫

 

মধ্যম

৬০০

২১০

৩০০

১৩৫

১২

 

মধ্যম পরিমিত

৪০০

১৪০

২০০

৯০

-

 

অতি নিম্ন

৯৪৫

৩৫০

৪৭২

৩১৫

৫০

 

অতি নিম্ন-নিম্ন

৮১০

৩০০

৪০৫

২৭০

৪০

 

নিম্ন

৬৭৫

২৫০

৩৩৭

২২৫

৩০

 

নিম্ন মধ্যম

৫৮০

২০০

২৭০

১৮০

 

মধ্যম

৪০৫

১৫০

২০২

১৩৫

১০

 

মধ্যম পরিমিত

২৭০

১০০

১৩৫

৯০

-

 

অতি নিম্ন

৭৮৭

২৮০

৪২০

১৩১

৫০

 

অতি নিম্ন-নিম্ন

৬৭৫

২৪০

৩৬০

১৯৮

৪০

 

নিম্ন

৫৬২

২০০

৩০০

১৬৫

৩০

 

নিম্ন মধ্যম

৪৫০

১৬০

২৪০

১৩২

২০

 

মধ্যম

৩৩৭

১২০

১৮০

৯৯

১০

 

মধ্যম পরিমিত

২২৫

৮০

১২০

৬৬

-

 

 

প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

ইউরিয়া সারের কার্যকারিতা জমিতে কম সময় থাকে তাই সার তিন কিস্তি-তে প্রয়োগ করতে হবে প্রথম কিস্তি- জমি তৈরির শেষ পর্যায়ে, ২য় কিস্তি- ধানের গোছায় - টি কুশি অবস্থায় কিস্তি- কাইচথোড় আসার - দিন পূর্বে দিতে হবে এবং ইউরিয়া ছারা অন্যান্য সার গুলো জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে দিতে হিবে

 

 

আগাছা দমন

আগাছা ধানগাছের সাথে আলো, পানি খাদ্য উপাদানের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় আগাছা প্রতিক্থল পরিবেশে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং ধানগাছের চেয়ে অধিক হারে বাড়তে পারে সাধারণত আমন বোরো মৌসুমের চেয়ে আউশ মৌসুমে, বিশেষ করে বোনা আউশে আগাছার উপদ্রব বেশি হয় আউশ মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাতের পর জমিতে দুএকটি চাষ দিয়ে পতিত অবস্থায় রেখে দিলে ঘাসের বীজ গজিয়ে উঠে কিছুদিন পর পুনরায় চাষ মই দিয়ে ধানের বীজ বপন করলে আগাছার উপদ্রব অনেকাংশে কমে যায় রোপা ধানের জমিতে -১০ সেন্টিমিটার পানি রখিলে জমিতে আগাছা কম জন্মায়সাধারণত ধানগাছ রোপনের পর থেকে পাকা পর্যন্ত যতদিন মাঠে থাকে তার তিন ভাগের প্রথম এক ভাগ সময় আগাছামুক্ত রাখলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় আউশ আমন মৌসুমের জন্য ৩০-৪০ দিন এবং বোরো মৌসুমের জন্য ৪০-৫০ দিন জমি আগাছামুক্ত রাখা উচিত
হাত দিয়ে, নিড়ানি যন্ত্রের সাহায্যে, আগাছানাশক ব্যবহার করে এবং জৈবিক পদ্ধতিতে আগাছা দমন করা যায় হাত দিয়ে আগাছা দমন অপেক্ষাকৃত সহজ রোপা ধানে কমপক্ষে দুবার আগাছা দমন করতে হয় প্রথমবার ধান লাগানোর ১৫ দিন পর এবং পরের বার ৩০-৩৫ দিন পর জমিতে পানির পরিমাণ ১০-১৫ সেন্টিমিটার রাখতে পারলে দুবার হাত নিড়ানি দিলেই হবে যদি আউশ বা আমন মৌসুমে জমি শুকিয়ে যায় বা বোরো মৌসুমে সেচ দিতে দেরি হয় তাহলে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং তখন আরেকটি হাত নিড়ানির প্রয়োজন পড়ে
নিড়ানি যন্ত্র ব্যবহারে দুসারির মাঝের আগাছা নির্মুল হয় কিন্তু দুগুছির ফাঁকে যে ঘাস থাকে তা হাত দিয়ে তুলতে হবে উঠানো আগাছা  মাটির ভিতর পুঁতে দিলে তা পচে গিয়ে জৈব সারের কাজ করবে ব্রি উইডার নামের নিড়ানি যন্ত্র দিয়ে ঘন্টায় ১০ শতাংশ জমির আগাছা নির্মুল করা যায়

 আগাছানাশক  ব্যবহার 
পদ্ধতি অধিকতর কার্য়কর সাশ্রয়ী হওয়ায় আগাছানাশকের ব্যবহার ক্রমেই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তরল, দানাদার পাউডার তিন ধরনের আগাছানাশক বাজারে পাওয়া যায় প্রি-ইমারজেন্স আগাছানাশক ধান লাগানোর - দিনের মধ্যে এবং পোস্ট-ইমারজেন্স আগাছানাশক আগাছার বৃদ্ধি তাপমাত্রাভেদে রোপন/বপনের ১০-২৫ দিনের মধ্যে ব্যবহার করতে হয় কিছু অনুমোদিত আগাছানাশক তার ব্যবহার সারণী - দেয়া হলো
জমিতে - সেন্টিমিটার পানি থাকা অবস্থায় প্রি-ইমারজেন্স আগাছানাশক প্রয়োগ করতে হয় পোস্ট-ইমারজেন্স আগাছানাশক আগাছার বৃদ্ধি - পাতাবিশিষ্ট হলেই ব্যবহার করা যায় আগাছানাশক প্রয়োগকৃত জমিতে ৩০ দিন পর আর একবার হালকা হাত নিড়ানির প্রয়োজন হতে পারে

 

Top of Form

Bottom of Form

Top of Form

জৈবিক আগাছা দমন পদ্ধতি

ভক্ষণকারী জীব, পোকামাকড়,ছত্রাক পরজীবির মাধ্যমে পরিবেশের কোন ক্ষতি না করে আগাছা দমন করাই হচ্ছে জৈবিক আগাছা দমন স্বমন্বিত ধান-হাঁস এমনি একটি জৈবিক আগাছা দমন পদ্ধতি

) ধান-হাঁস চাষ পদ্ধতিতে জমি তৈরির সময় ২০-২৫ মণ গোবর সার মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া প্রয়োজন ধানের চারা রোপনের -১৪ দিন পর ২০-৩০ দিন বয়সের হাঁসের বাচ্চা সারি করে লাগানো ধান ক্ষেতে অবমুক্ত করতে হয় এবং ধানে ফুল আসার আগে হাঁস ধান ক্ষেত থেকে উঠিয়ে নিতে হয়
) হাঁসের বাচ্চা যাতে অন্যত্র না চলে যায় বা এদের সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হলেক্ষেতের চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দিলে ভাল হয়
) হিসাব করে দেখা গেছে, পদ্ধতিতে প্রতি বিঘা জমিতে ৪০-৫০ টি হাঁসের বাচ্চার প্রয়োজন
) হাঁস কার্যকরভাবে ধানের আগাছা খেয়ে সম্পূর্ণভাবে তা ধ্বংস করে  এবং কীটপতঙ্গ খেয়ে তাদেরকে দমন করে হাঁসের বিষ্ঠা জমিতে জৈব সারের কাজ করে
) পদ্ধতিতে আগাছা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না ফলে ধান চাষের খরচ অনেক কমে যায়
পদ্ধতি অনুসরণ করে কৃষক একই সাথে ধান, হাঁস ডিম উৎপাদন করতে পারেন

 

 রোগ পোকামাকড় দমনঃ

 

রোগের নাম

লক্ষণ

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

উৎস

খোলপড়া রোগ

প্রথমে ধান গাছের নীচের অংশে সবুজ ধূসর গোল দাগ দেখা যায়আস্তে আস্তে দাগ বড় হয়ে খোলের উপরিভাগে সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়েখোল দেখতে গোখরা সাপের চামড়ার দাগের মত মনে হয়একটি কুশী বা গাছ থেকে অন্য কুশী বা  গাছে রোগ ছড়ায়ধান গাছের বৃদ্ধির যে কোন স্তরে রোগের আক্রমণ হতে পারে তবে কুশী ছাড়ার শেষ পর্যায় থেকে ধানের ছড়া বের হওয়া  র্পযন্ত খোলপচা রোগের প্রকোপ বেশী হয় আক্রমণ তীব্র হলে ধান গাছ পোড়া মনে হয় এবং ক্ষেতের মধ্যে অংশ বিশেয় বসে যায় ধান গাছ মরে যায় খোলপচা রোগের আক্রমণে শতকরাপ ২৫-৩০ ভাগ ফলন কমে যায়

টিল্ট ২৫০ ইসি, মাত্রা : ৪০০ এমএল/একর; ব্যবহার বিধি:প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ এমএল  টিল্ট মিশিয়ে শতাংশ জমিতে ধান গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুনআক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে প্রয়োজনে ১৫ দিন পর পুনরায় একই নিয়মে স্প্রে করুন অথবা স্কোর ২৫০ ইসি, মাত্রা : ২০০ এমএল/একর; ব্যবহার বিধি : প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল অথবা  স্কোর মিশিয়ে শতাংশ জমিতে ধান গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুনআক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে প্রয়োজনে ১৫ দিন পর পুনরায় একই নিয়মে স্প্রে করুন অথবা এনভিল এসসি, মাত্রা : ২০০ এমএল/একর, ব্যবহার বিধি : ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল এনভিল মিশিয়ে শতাংশ জমিতে ধান গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুনআক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে প্রয়োজনে ১৫ দিন পর পুনরায় একই নিয়মে স্প্রে করুন

টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি, এনভিল এসসি

সিনজেনটা

গোল্ডজিম ৫০০ এসসি, ২০ এম এল/১০ লি. পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে

গোল্ডজিম ৫০০ এসসি

এসিআই

বাদামী দাগ

ধান গাছের পাতায় এবং বীজের খোসায় এই রোগের স্পষ্ট লক্ষন দেখা যায় প্রথমে পাতার দাগগুলো ডিম্বাকৃতি এবং তিল বীজের মত মনে হয় প্রায় একই রকম দাগ পাতার সমস্ত অংশে সমানভাবে দেখা যায় দাগের কেন্দ্র ধূসর বা সাদা বর্নের এবং কিনারা হালকা রংয়ের হয়

টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর

টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি

সিনজেনটা

সরু বাদামী দাগ

পাতার মধ্যে ছোট, সরু চিকন লম্বা-লম্বি বাদামী দাগ খোলা বীজের বোটায় এবং ধানের তুষের উপর হতে পারে লম্বা দাগগুলো পাতার শিরার সমান্তরালে থাকে দাগের কেন্দ্রে হালকা রংয়ের এবং সরু সাধারনত এই সরু বাদামী দাগ লাল বাদামী এবং দাগের কিনারা বাদামী রংয়ের হয়ে যায়

টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর

টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি

সিনজেনটা

খোল পচা

ধান গাছে থোড় আসার শেষ পর্যায় যে খোল ছড়াকে আবৃত করে রাখে সেই খোলে এই রোগ হয় প্রথমে গোলাকার বা অনিয়মিত লম্বা দাগ হয় দাগের কেন্দ্র ধূসর কিনারা বাদামী রং বা ধূসর বাদামী হয় দাগগুলো একত্রে বড় হয়ে সম্পূর্ন খোলেই ছড়াতে পারে থোড়ের মুখ বা শীষ পচে যায় এবং গুড়া ছত্রাংশ খোলের ভিতর প্রচুর দেখা যায় শীষ আংশিক বের হয় খুব কম সংখ্যক ধান পুষ্ট হয়

স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর

স্কোর ২৫০ ইসি

সিনজেনটা

এমকোজিম ৫০ ডব্লিউ পি- প্রতি একরে ২০০-২০৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে

এমকোজিম ৫০ ডব্লিউ পি

সি আই

পাতার ফোস্কা পড়া

সাধারনত ধান গাছের বয়স্ক পাতার আগায় এই রোগ দেখা যায় মাঝে মাঝে পাতার মাঝখানে বা কিনারায় হতে পারে দাগ অনেকটা আয়তাকার বা হীরক আকৃতির জলছাপের মত মনে হয় দাগ বড় হয়ে ডিম্বাকৃতি বা আয়তাকার জলপাই রংয়ের হয় দাগের ভিতর গাড় বাদামী চওড়া রেখা হালকা বাদামী রেখা পরপর বেস্টনী করে থাকে এবং কিছুটা ডোরাকাটা দাগ মনে হয় বেশী আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে খড়ের রং হয় দাগের কিনারা হালকা বাদামী এলাকার মত হয়

টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর

টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি

সিনজেনটা

কান্ড পচা

ছত্রাক সাধারনতঃ জমির পানির উপরের তল বরাবর কোন ক্ষতের মাধ্যমে গাছের ভিতর ঢুকে রোগ সৃষ্টি করে প্রথমে গাছের বাইরের খোলে কালচে গাড়, অনিয়মিত দাগ পড়ে এবং আস্তে আস্তে বড় হয় পরে ছত্রাক গাছের কান্ডের ভিতর ঢুকে কান্ডকে দুর্বল করে গাছ হেলে ভেঙ্গে পড়ে

টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর

টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি

সিনজেনটা

প্রাউড ২৫ ইসি-বিঘা প্রতি ১৩৫ এম এল প্রয়োগ করতে হবে

প্রাউড ২৫ ইসি

এসিআই

পোকামাকড়ের নাম

লক্ষণ

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

উৎস

 

 

মাজরা পোকা( হলুদ মাজরা, কাল মাথা মাজরা, গোলাপী মাজরা)

হলুদ মাজরা পাতার উপরে নীচে ডিম পারে ডিমের গাদার উপর হালকা ধূসর রংয়ের আবরন পড়ে  ডিম ফুটে কীড়া বের হয়ে আস্তে আস্তে কান্ডের ভিতর প্রবেশ করে ভিতরের নরম অংশ কুড়ে কুড়ে খায় ক্রমে গাছের ডিগ পাতার গোড়া খেয়ে ফেলে ফলে ডিগ মারা যায় শীষ আসার আগ পর্যন্ত ধরনের ক্ষতি হলে মরাডিগ দেখা যায় এবং ডিগ টান দিলে সহজেই উঠে আসে  শীষ আসার পর মাজরা পোকা ক্ষতি করলে সম্পূর্ন শীষ শুকিয়ে যায় একে সাদাশীষ বা মরাশীষ বলে

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি -৭৫ গ্রাম/হেক্টর: ১০ লিটার পানিতে . গ্রাম ভিরতাকো মিশিয়ে শতাংশ জমিতে ভালভাবে স্প্রে করুন ভিরতাকো শেষ প্রয়োগ ফসল তোলার মাঝে ২১ দিন ব্যবহার রাখা উচিত রাইসন ৬০ ইসি৬৮০ এমএল/একর : পোকার আক্রমন দেখা দিলে প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৩৪ এমএল রাইসন মিশিয়ে শতাংশ জমিতে ভালভাবে স্প্রে করুন মিশ্রনের পরপরই কীটনাশক স্প্রে করুন (জমিতে আড়আড়িভাবে হেঁটে ১০০ গোছায় কমপক্ষে টি পূর্নাঙ্গ মাজরা পোকা আছে তা নিশ্চিত হয়ে কীটনাশক প্রয়োগ করুন)

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, বাসুডিন ১০ জি, রাইসন ৬০ ইসি

সিনজেনটা

ব্রিফার জি-.৩৫ কেজি / বিঘাতে প্রয়োগ করতে হবে

ব্রিফার জি

এসিআই

ফুরাডান জি- কেজি/একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে

ফুরাডান জি

পদ্মাওয়েল কো.লি.

পাতা মোড়ানো পোকা

পূর্ন বয়স্ক স্ত্রী পোকা পাতার মধ্য শিরার কাছে ডিম পাড়ে ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে পাতার সবুজ অংশ খায় বড় হবার সাথে সাথে পাতা লম্বালম্বি ভাবে মুড়িয়ে একটা নলের মত তৈরী করে মোড়ানো পাতার মধ্যেই কীড়া পুত্তলীতে পরিনত হয় মোড়ানো পাতা ভিতরে সবুজ বাদামী রংয়ের গুড়া গুড়া মল দেখা যায় থোড় আসার সময় পোকার আক্রমন হলে চিটা ধানের সংখ্যা বেশী হয়

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৭৫ গ্রাম/হেক্টর) অথবা রাইসন ৬০ ইসি (৬৮০ এমএল/একর): পোকার আক্রমন দেখা দিলে প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৩৪ এমএল রাইসন মিশিয়ে শতাংশ জমিতে ভালভাবে স্প্রে করুন মিশ্রনের পরপরই কীটনাশক স্প্রে করুন আক্রমন বেশী হলে -১৪ দিন  পরপর এক নিয়মে স্প্রে করুন

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, রাইসন ৬০ ইসি

সিনজেনটা

সবুজ পাতা ফড়িং

·  পূন বয়স্ক বাচ্চা উভয় অবস্থায় পোকা ধানের পাতার রস চুষে খায়·  ফলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় গাছ খাট হয়ে যায়  এই পোকা টুংরো রোগের ভাইরাস ছড়িয়ে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করে

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৩০-৩১ গ্রাম/একর)

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি

সিনজেনটা

বাদামী গাছ ফড়িং

·  বাচ্চা পূর্ন বয়স্ক পোকা একসঙ্গে ধান গাছের গোড়ায় বসে রস চুষে খায় ফলে ধান গাছ দ্রুত শুকিয়ে খড়ের মত হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সম্পূর্ন ধান খেত নষ্ট হয়ে যায়·  আক্রান্ত খেতবাজ পোড়ারমত হয়ে যায়

একতারা ২৫ ডব্লিউজি২৫ গ্রাম/একর প্রতি গোছায় - টি বাদামী গাছ ফড়িং দেখা দিলে একতারা স্প্রে করুন ১০ লিটার পানিতে . গ্রাম একতারা মিশিয়ে শতাংশ জমিতে গাছের গোড়ায় ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুন আক্রমনের তীব্রতানুযায়ী -১৪ দিন পর পর একই নিয়মে স্প্রে করুন ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৩০ গ্রাম/একর)

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, একতারা ২৫ ডব্লিউজি

সিনজেনটা

পামরী পোকা

·  পূর্ন বয়স্ক পামরী পোকা পাতার উপরের সবুজ অংশ এমনভাবে কুড়ে কুড়ে খায় যে শুধু পর্দাটাই বাকী থাকে·  কীড়াগুলো পাতার দুই পর্দার মধ্যে সুড়ঙ্গ করে সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে অনেকগুলি কীড়া এভাবে খাওয়ার ফলে পাতা শুকিয়ে যায় কীড়া পুত্তলী সুড়ঙ্গের মধ্যেই থাকে

সম্মিলিতভাবে একযোগে হাতজাল দিয়ে পূর্নবয়স্ক পোকা ধরে মেরে ফেলা আক্রান্ত খেতের পাতা গোড়া থেকে ইঞ্চে উপরে কেটে পাতাগুলে নষ্ট করা ৩৫% ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্থ হলে অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করুন

ব্রাভো ৫০ এস্পি (কারটাফ)-১৬ গ্রাম/১০লি. পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে

ব্রাভো ৫০ এস্পি (কারটাফ)

স্কয়ার কো. লি.

গলমাছি

 স্ত্রী গলমাছি পাতার নীচের পাশে ডিম পাড়ে  ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ধান গাছের মাঝখানে বাড়ন্ত কুশীর গোড়ায় আক্রমন করে ফলে মাঝখানে পাতাটা পেয়াজের পাতার মত নলাকার হয়ে যায় এই অবস্থায় কুশীতে শীষ বের হয় না

ভিরতাকো

সিনজেনটা

সিডিয়াল জি- কেজি/একর প্রয়োগ করতে হবে

সিডিয়াল জি

এসিআই

গান্ধী পোকা

·  পূর্ন বয়স্ক গান্ধী পোকা ধানের পাতা শীষের উপর সারি করে ডিম পাড়ে·  পূর্ন বয়স্ক পোকা বা বাচ্চা পোকা উভয়ই ধানের দানা আক্রমন করে ধানের দানায় যখন দুধ সৃষ্টি হয় তখন আক্রমন করলে ধান চিটা হয়ে যায়·  সবুজ রংয়ের বাচ্চা এবং পূর্ন বয়স্ক গান্ধী পোকার গা থেকে বিশ্রি দুর্গন্ধ বের হয়·  ধানের মান খারাপ হয়, মাড়াইয়ের সময় চাল ভেঙ্গে যায়

·  হাত জালের সাহায্যে গান্ধী পোকা সংগ্রহ করে মেরে ফেলা·  কেরোসিন ভিজানো দড়ি আক্রান্ত খেতে আড়আড়িভাবে টেনে পোকা দমন করা·  প্রতি গোছায় - টি গান্ধী পোকা দেখা দিলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা·

মিপসিন ৭৫ ডব্লিউ পি, ৪৫৩ গ্রাম / একর

লেদা পোকা

লেদা পোকার কীড়া ধান গাছের পাতা পাশ থেকে এমনভাবে কাটে যে কেবল ধানগাছের কান্ডই অবশিষ্ট থাকে সাধারনত শুকনা জমিতে এদের আক্রমন বেশী হয় কোন কোন সময় চারা গাছের গোড়াও কাটে

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৩০ গ্রাম/একর) ব্যবহার করা

ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি

 

 বিশেষ পরিচর্যাঃ

এলসিসি

এলসিসি বা লিফ কালার চার্ট হলো একটি সাধারণ এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের তৈরি একটি ছোট স্কেল যা ব্যবহার করে ধান ক্ষেতে সঠিক পরিমাণে বেশি কার্যকরভাবে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যায় স্কেলটিতে হাল্কা হলুদাভ সবুজ থেকে ক্রমান্বয়ে গাঢ় সবুজ রঙের ৪টি স্ট্রিপ আছে যা দিয়ে ধানের পাতার সবুজ রঙের সামঞ্জস্য বিশ্লেষণ করে জমিতে ইউরিয়া সারের প্রয়োগমাত্রা নির্ধারণ করা হয়

 

সেচ ব্যবস্থাপনা

চারা রোপনের পর জমিতে পানি কম রাখতে হবে যাতে চারা তলিয়ে না যায় ধানের জমিতে সব সময় গভীর পানি ধরে রাখার প্রয়োজন নেই তার চেয়ে একটি পূর্ণ মাত্রায় সেচ দেওয়ার পর পরবর্তী সেচ দেওয়ার আগে জমি তিন দিন শুকনো রাখলে ধানের ফলন তেমন কমবে না উপরন্তু পানির পরিমণি ২৫-৩০ ভাগ কম লাগবে গভীর নলকূপ এলাকায় এই পদ্ধতিতে প্রায় ৪০ ভাগ জমির পরিমাণ একই পরিমাণ পানি দিয়ে চাষাবাদ বাড়ানো সম্ভব পদ্ধতিতে আগাছার পরিমাণ বেশি হলে আগাছানাশক প্রয়োগ করা লাভজনক ধান গাছে কাইচ থোড় আসার আগ পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে পানি সেচ দেওয়া যায় তবে কাইচথোড় আসা শুরু করলে - সেন্টিমিটার পানি থাকলে ভাল হয় এছাড়াও আমন ধান কাটার পর জমি পতিত না রেখে একটা বা দুটো চাষ দিয়ে ফেলে রাখলে বোরো মৌসুমে জমি তৈরিতে শতকরা ২০ ভাগ পানি কম লাগবে কারণ পতিত জমিতে ফাটল ধরলে জমি তৈরির সময় ফাটল দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পানির অপচয় হয়
সার প্রয়োগের আগে জমি থেকে পানি কমিয়ে উপরি প্রয়োগ করতে হয় এবং - দিন পর আবার পানি দিলে সারের কার্য়কারিতা বৃদ্ধি পায় জমিতে পানি ধরে রাখলে দানাদার কীটনাশকের গুণাগুণ বাড়ে ধান পাকার সময় দানা শক্ত হওয়া শুরু হলেই জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হয় আউশ আমন মৌসুমে বৃষ্টির পানির সাহায্যে ভালভাবেই  উফশী ধানের চাষ করা যায় বৃষ্টির পানি ব্যবহার করে চাষ করতে হলে ক্ষেতে পানি ধরে রাখার জন্য আইল ১৫ সেন্টিমিটার উঁচু করে বেঁধে দিতে হবে
 
সেচের পানির অপচয় রোধ


 
অপচয় রোধকল্পে পিভিসি অথবা প্লাস্টিক পাইপ ব্যবহার করা যায় পদ্ধতিতে সেচ দিলে পানির অপচয় বন্ধের সাথে সাথে সেচ খরচও কমানো যায় কারণ অবস্থায় গভীর নলক্থ্থপ থেকে কাঁচা নালার সেচের তুলনায় শতকরা ৪২ ভাগ বেশী জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব তাছাড়া অঙ্কুরিত বোনা ধানের চাষ করে পানির কার্যক্ষমতা শতকরা ২৯ ভাগ বৃদ্ধি করা সম্ভব
 
সম্পূরক সেচ


বৃষ্টি নির্ভর ধান চাষে খরা মোকাবেলা করার জন্য সম্পূরক সেচ দিতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুবারে ১৫২ মিলিমিটার সম্পূরক সেচ দিয়ে শতকরা ৪০-৫০ ভাগ ফলন বাড়ানো যায়। বৃষ্টি-নির্ভর খরা কবলিত ধানের চেয়ে সম্পূরক সেচযুক্ত ধানের ফলন হেক্টরে প্রায় টন বেশী হয়। অগভীর কিংবা গভীর নলক্থপ ছাড়াও পুকুর পদ্ধতিতে খরা মোকাবেলা করা যায়। জন্য ধানি জমির আয়তনের শতকরা ভাগ জায়গায় মিটার গভীর করে পুকার কেটে নিতে হবে। ছোট পুকুরে যে পরিমাণ পানি ধরে রাখা যাবে তা দিয়ে খরার সময় রোপা আমন ধানকে রক্ষা করা যায়। উপরন্তু ছোট পুকুরে মাছ চাষও করা যায়

সেচ ব্যবস্থাপনা

চারা রোপনের পর জমিতে পানি কম রাখতে হবে যাতে চারা তলিয়ে না যায় ধানের জমিতে সব সময় গভীর পানি ধরে রাখার প্রয়োজন নেই তার চেয়ে একটি পূর্ণ মাত্রায় সেচ দেওয়ার পর পরবর্তী সেচ দেওয়ার আগে জমি তিন দিন শুকনো রাখলে ধানের ফলন তেমন কমবে না উপরন্তু পানির পরিমণি ২৫-৩০ ভাগ কম লাগবে গভীর নলকূপ এলাকায় এই পদ্ধতিতে প্রায় ৪০ ভাগ জমির পরিমাণ একই পরিমাণ পানি দিয়ে চাষাবাদ বাড়ানো সম্ভব পদ্ধতিতে আগাছার পরিমাণ বেশি হলে আগাছানাশক প্রয়োগ করা লাভজনক ধান গাছে কাইচ থোড় আসার আগ পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে পানি সেচ দেওয়া যায় তবে কাইচথোড় আসা শুরু করলে - সেন্টিমিটার পানি থাকলে ভাল হয় এছাড়াও আমন ধান কাটার পর জমি পতিত না রেখে একটা বা দুটো চাষ দিয়ে ফেলে রাখলে বোরো মৌসুমে জমি তৈরিতে শতকরা ২০ ভাগ পানি কম লাগবে কারণ পতিত জমিতে ফাটল ধরলে জমি তৈরির সময় ফাটল দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পানির অপচয় হয়
সার প্রয়োগের আগে জমি থেকে পানি কমিয়ে উপরি প্রয়োগ করতে হয় এবং - দিন পর আবার পানি দিলে সারের কার্য়কারিতা বৃদ্ধি পায় জমিতে পানি ধরে রাখলে দানাদার কীটনাশকের গুণাগুণ বাড়ে ধান পাকার সময় দানা শক্ত হওয়া শুরু হলেই জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হয় আউশ আমন মৌসুমে বৃষ্টির পানির সাহায্যে ভালভাবেই  উফশী ধানের চাষ করা যায় বৃষ্টির পানি ব্যবহার করে চাষ করতে হলে ক্ষেতে পানি ধরে রাখার জন্য আইল ১৫ সেন্টিমিটার উঁচু করে বেঁধে দিতে হবে
 
সেচের পানির অপচয় রোধ


 
অপচয় রোধকল্পে পিভিসি অথবা প্লাস্টিক পাইপ ব্যবহার করা যায় পদ্ধতিতে সেচ দিলে পানির অপচয় বন্ধের সাথে সাথে সেচ খরচও কমানো যায় কারণ অবস্থায় গভীর নলক্থ্থপ থেকে কাঁচা নালার সেচের তুলনায় শতকরা ৪২ ভাগ বেশী জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব তাছাড়া অঙ্কুরিত বোনা ধানের চাষ করে পানির কার্যক্ষমতা শতকরা ২৯ ভাগ বৃদ্ধি করা সম্ভব
 
সম্পূরক সেচ


বৃষ্টি নির্ভর ধান চাষে খরা মোকাবেলা করার জন্য সম্পূরক সেচ দিতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুবারে ১৫২ মিলিমিটার সম্পূরক সেচ দিয়ে শতকরা ৪০-৫০ ভাগ ফলন বাড়ানো যায়। বৃষ্টি-নির্ভর খরা কবলিত ধানের চেয়ে সম্পূরক সেচযুক্ত ধানের ফলন হেক্টরে প্রায় টন বেশী হয়। অগভীর কিংবা গভীর নলক্থপ ছাড়াও পুকুর পদ্ধতিতে খরা মোকাবেলা করা যায়। জন্য ধানি জমির আয়তনের শতকরা ভাগ জায়গায় মিটার গভীর করে পুকার কেটে নিতে হবে। ছোট পুকুরে যে পরিমাণ পানি ধরে রাখা যাবে তা দিয়ে খরার সময় রোপা আমন ধানকে রক্ষা করা যায়। উপরন্তু ছোট পুকুরে মাছ চাষও করা যায়

সেচ ব্যবস্থাপনা

চারা রোপনের পর জমিতে পানি কম রাখতে হবে যাতে চারা তলিয়ে না যায় ধানের জমিতে সব সময় গভীর পানি ধরে রাখার প্রয়োজন নেই তার চেয়ে একটি পূর্ণ মাত্রায় সেচ দেওয়ার পর পরবর্তী সেচ দেওয়ার আগে জমি তিন দিন শুকনো রাখলে ধানের ফলন তেমন কমবে না উপরন্তু পানির পরিমণি ২৫-৩০ ভাগ কম লাগবে গভীর নলকূপ এলাকায় এই পদ্ধতিতে প্রায় ৪০ ভাগ জমির পরিমাণ একই পরিমাণ পানি দিয়ে চাষাবাদ বাড়ানো সম্ভব পদ্ধতিতে আগাছার পরিমাণ বেশি হলে আগাছানাশক প্রয়োগ করা লাভজনক ধান গাছে কাইচ থোড় আসার আগ পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে পানি সেচ দেওয়া যায় তবে কাইচথোড় আসা শুরু করলে - সেন্টিমিটার পানি থাকলে ভাল হয় এছাড়াও আমন ধান কাটার পর জমি পতিত না রেখে একটা বা দুটো চাষ দিয়ে ফেলে রাখলে বোরো মৌসুমে জমি তৈরিতে শতকরা ২০ ভাগ পানি কম লাগবে কারণ পতিত জমিতে ফাটল ধরলে জমি তৈরির সময় ফাটল দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পানির অপচয় হয়
সার প্রয়োগের আগে জমি থেকে পানি কমিয়ে উপরি প্রয়োগ করতে হয় এবং - দিন পর আবার পানি দিলে সারের কার্য়কারিতা বৃদ্ধি পায় জমিতে পানি ধরে রাখলে দানাদার কীটনাশকের গুণাগুণ বাড়ে ধান পাকার সময় দানা শক্ত হওয়া শুরু হলেই জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হয় আউশ আমন মৌসুমে বৃষ্টির পানির সাহায্যে ভালভাবেই  উফশী ধানের চাষ করা যায় বৃষ্টির পানি ব্যবহার করে চাষ করতে হলে ক্ষেতে পানি ধরে রাখার জন্য আইল ১৫ সেন্টিমিটার উঁচু করে বেঁধে দিতে হবে
 
সেচের পানির অপচয় রোধ


 
অপচয় রোধকল্পে পিভিসি অথবা প্লাস্টিক পাইপ ব্যবহার করা যায় পদ্ধতিতে সেচ দিলে পানির অপচয় বন্ধের সাথে সাথে সেচ খরচও কমানো যায় কারণ অবস্থায় গভীর নলক্থ্থপ থেকে কাঁচা নালার সেচের তুলনায় শতকরা ৪২ ভাগ বেশী জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব তাছাড়া অঙ্কুরিত বোনা ধানের চাষ করে পানির কার্যক্ষমতা শতকরা ২৯ ভাগ বৃদ্ধি করা সম্ভব
 
সম্পূরক সেচ


বৃষ্টি নির্ভর ধান চাষে খরা মোকাবেলা করার জন্য সম্পূরক সেচ দিতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুবারে ১৫২ মিলিমিটার সম্পূরক সেচ দিয়ে শতকরা ৪০-৫০ ভাগ ফলন বাড়ানো যায়। বৃষ্টি-নির্ভর খরা কবলিত ধানের চেয়ে সম্পূরক সেচযুক্ত ধানের ফলন হেক্টরে প্রায় টন বেশী হয়। অগভীর কিংবা গভীর নলক্থপ ছাড়াও পুকুর পদ্ধতিতে খরা মোকাবেলা করা যায়। জন্য ধানি জমির আয়তনের শতকরা ভাগ জায়গায় মিটার গভীর করে পুকার কেটে নিতে হবে। ছোট পুকুরে যে পরিমাণ পানি ধরে রাখা যাবে তা দিয়ে খরার সময় রোপা আমন ধানকে রক্ষা করা যায়। উপরন্তু ছোট পুকুরে মাছ চাষও করা যায়

******* end*******

 



(islam)[i] Web site referenced document